২৬৫ রানের লক্ষ্য ভারতের মতো পরাশক্তি দলের জন্য খুব একটা কঠিন বলে কখনোই গণ্য হয়না। তার ওপর এজবাস্টনের ব্যাটিং স্বর্গে এই রান যে নিতান্তই ক্ষুদ্র সেটি বলাই বাহুল্য। তবে এই লক্ষ্যটিও বিশাল বলে গণ্য হতে পারতো ভারতের জন্য, যদি বাংলাদেশের বোলাররা ব্যাটসম্যানদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারতেন।

কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে একেবারেই নির্বিষ ছিলো বাংলাদেশের বোলিং। এক মাশরাফি ছাড়া ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সামনে কেউ দাঁড়াতেই পারেনি। যে মুস্তাফিজ এই ভারতের বিপক্ষেই অভিষেক ম্যাচে ৫ উইকেট শিকার করেছিলেন তিনিই এই ম্যাচে ৬ ওভার বোলিং করে ৫৩ রানে উইকেট শুন্য ছিলেন!তবে শুধু বোলিংই নয়, এদিন বাংলাদেশের ব্যাটিংয়েও যথেষ্ট আনাড়িপনা দেখা গেছে।

শুধু মাত্র তামিম ইকবাল  এবং মুশফিকুর রহিম ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই সেভাবে রান করতে সক্ষম হননি। সুতরাং শেষ পর্যন্ত একপেশে একটি ম্যাচ দিয়েই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হলো টাইগারদের।দলের এহেন পারফর্মেন্সে স্বভাবতই বেশ হতাশ বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি জানান প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে ওঠার গৌরব অর্জন করলেও দলের পারফর্মেন্সে অনেকটাই গলদ ছিলো পুরো টুর্নামেন্টেই।

তবে অনেকে মনে করছেন বড় টুর্নামেন্ট দেখে দলের জুনিয়র ক্রিকেটারদের ওপর বেশি চাপ পরে গিয়েছিলো। এরই ফলশ্রুতিতে পারফর্মেন্স খারাপ হয়েছে। তবে বিষয়টি মানতে চাইলেন না সাকিব। তার মতে এক্ষেত্রে সিনিয়র জুনিয়রের দোহাই দিয়ে লাভ নেই। বরং দল হিসেবে পারফর্মেন্সই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।‘সিনিয়র-জুনিয়র বলে তো লাভ নেই।

দল হিসেবে কেমন করেছি সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। সব মিলিয়ে আমরা যে খুব ভালো করতে পেরেছি, তা বলব না। চার ম্যাচের দুটিতেই সহজে হেরে গেছি’, বলছিলেন সাকিব।

বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বললেন,  ‘শুধু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই আমরা ভালো খেলেছি। তা-ও বলব না খুব ভালো খেলেছি। ওদের সঙ্গে জিতেছি, এটা একটা ভালো দিক। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও আমরা ভালো খেলিনি।

তবে আমরা অনেক এগিয়েছি। এখান থেকে আরও সামনে যেতে হবে। বিশ্ব পর্যায়ে বড় টুর্নামেন্টে যদি ভালো কিছু করতে হয়, আমাদের আরও অনেক জায়গায় উন্নতি করতে হবে।’সেইমিফাইনাল ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা জানিয়েছিলেন

তাঁর দল এখনও বড় টুর্নামেন্টে খেলার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত নয়। এবার সাকিবও সেটি স্বীকার করে নিলেন। তবে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে হলে বেশি বেশি ম্যাচ খেলতে হবে এবং জয় পেতে হবে বলে অভিমত দিলেন তিনি। সাকিবের ভাষায়,‘মানসিক একটা ব্যাপার তো থাকেই।

ম্যাচ খেলতে খেলতে এবং জিততে জিততে মানসিক উন্নতি আসবে। না জিতলে খুব বেশি মানসিক উন্নতি আসবে, এটা বলা ভুল। গত দুই বছর এত ম্যাচ জিতেছি বলেই আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল, সেমিফাইনালে আসতে পারি।’

সেমিফাইনালে পা রাখার পর সামনে আরও এগিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সন্দিহান ছিলেন তারা নিজেরাই সেটাও স্বীকার করে নিলেন সাকিব। তবে পাশাপাশি এটাও জানালেন যে দল এখন সঠিক পথেই আছে।‘সেমিফাইনালে আমাদের ওই বিশ্বাস ছিল কি না যে আমরা আরও

এগিয়ে যেতে পারব, সেটা একটা জানার বিষয়। তবে আমার মনে হয় আমরা সঠিক পথেই আছি। ছোটখাটো কিছু জায়গায় উন্নতি করতে থাকলে হয়তো আরও ভালো জায়গায় যেতে পারব।’