
২০০৬ সালে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে হারতে বসেছিলো অস্ট্রেলিয়া। তারপরও জয় পায় রিকি পন্টিংয়ের দল। সেই হার এখনও পোড়ায় বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটারদের। ওই ম্যাচে মনে রাখার মতো আরও ঘটনা ছিলো। প্রায় ৩০ জন সংবাদকর্মীর উপর হামলা চালায় পুলিশ। ১১ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমে আবারও উঠে এলো সেই দুঃস্মৃতি।
জেসন গিলেস্পি ম্যাচটিকে মনে রাখবেন অনেক কারণে। অস্ট্রেলিয়ার এই ফাস্ট বোলার জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে মাশরাফি মুর্তজা, আব্দুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ রফিকদের বানিয়েছিলেন নাজেহাল। একজন বোলার হয়েও করেছিলেন ডাবল সেঞ্চুরি! তৎকালীন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য এটাও কম লজ্জার নয়। কিন্তু সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা যেন সবকিছুকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলো।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) ওয়েবসাইটের এক প্রতিবেদনে ওইদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে লেখা হয়েছে, ‘জ্যৈষ্ঠ এক আলোকচিত্রীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে স্টেডিয়ামের দায়িত্বে থাকা নিয়াপত্তা প্রধান। ততক্ষণে গিলেস্পি ১১ রানে বাংলাদেশের তিন ব্যাটসম্যানকে সাজ ফিরিয়েছেন। এমন সময় দুপুরের খাবার বিরতি দেওয়া হয়।
মাঠের বাইরে চলছে সংবাদকর্মী-পুলিশের বাকবিতণ্ডা। সাংবাদিকদের দাবিছিলো, নিরাপত্তাপ্রধানকে আলোকচিত্রীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। এ নিয়ে অবস্থা গরম হতে থাকলে এক পর্যায়ে প্রায় ৩০ জন সাংবাদিক, আলোকচিত্রী ও ক্যামেরা অপারেটরের উপর হামলা চালায় পুলিশ। রাইফেল ও জুতা দিয়ে পিষতে থাকে।
পরবর্তীতে সাংবাদিকরা আশ্রয় নেয় আম্পায়ার ও রেফারি জেফ ক্রো’র ছোট্ট রুমে, যেখানেই তারা দুপুরের খাবার খেয়েছলেন।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘সবমিলিয়ে প্রায় ১০ জন আহত হয়েছিলো। এদের মধ্যে একজনকে অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। একজন মাথায় আঘাত পায়। একজন মাথায় বেশি আঘাত পাওয়ায় কোমায় চলে যায়, তাকে দ্রুত বিমানে করে ঢাকায় নেওয়া হয়। পরবর্তীতে প্রতিক্রিয়া হিসেবে টেস্টের বাকি দিনগুলোকে বয়কট করে দেশের পুরো গণমাধ্যম। সত্যিই তারা সেটা করে দেখিয়েছিলো।’
ওই ম্যাচের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান আফতাব আহমেদ বলেন, ‘আমরা খুব অবাক হয়েছিলাম। আমাদের মন খারাপ করে দেওয়ার মতো লজ্জাজনক ঘটনা ঘটেছিলো। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররাও তাজ্জব হয়ে যায়। রিকি পন্টিংরা শেম শেম করছিলো।’
