বাংলাদেশে কারো সামান্য খ্যাতি বা নাম হলেই তাকে নিয়ে শুরু হয়ে যায় নানা রকম বিজনেস। শুরু হয়ে যায় তার নাম ভাঙ্গিয়ে নানা রকম প্রতারনা। তেমনি ফেসবুকে এক শ্রেণীর কতিপয় ব্যাক্তি ভিবিন্ন সময় তাদের নামে ভুয়া আইডি খুলে প্রতারনা শুরু করেন। তেমনি প্রতরনার শিকার হয়েছেন বাংলাদেশের নারী দলের ক্রিকেটাররা…

প্রথম প্রতারনা: রাত ১২টার দিকে একজন ক্রীড়া সংবাদিকের ফেসবুক ক্ষুদে বার্তা এলো। সেই বার্তা পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক অলরাউন্ডার রুমানা আহমেদ। কিছুক্ষণ চ্যাটিং করার পরই রুমানা চাইলেন সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমানের নম্বর। ক্রীড়া সাংবাদিকের সন্দেহ হতেই রুমানা আহমেদ সেই আইডি থেকে দেয়া হচ্ছিল অসংলগ্ন উত্তর।

এত রাতে কেন সাকিব ও মোস্তাফিজের নম্বর দরকার- এমন প্রশ্নের জবাবে সেই আইডি থেকে বলা হলো, ‘আপনি সাংবাদিক, নম্বর থাকলে দেন না থাকলে এত কথা কেন!’ এরপর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে জানানোর কথা বলতেই এবার হুমকি- ‘বলেন বিসিবি কি করতে পারবে দেখে নিব! আপনাকেও দেখে নেবো।’

একই দলের ক্ষুদে বার্তা এসেছে আরো কয়েকজন ক্রীড়া সাংবাদিকের কাছে। শুধু রুমানাই নয়, বাংলাদেশ দলের নারী ক্রিকেটার ফাহিমার নামে ভুয়া আইডি খুলেও একই ধরনের প্রতারণার চেষ্টা করা হচ্ছে।

দ্বিতিয় প্রতারনা: কঠিন ক্রিকেট ফ্যান তিনি। ফেসবুকে ক্রিকেটারদের ফলো করাই তার কাজ। পড়েন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বেশির ভাগ ক্রিকেটারকেই তিনি ফলো করেছেন। বা তাদের সঙ্গে যে ভাবেই হোক ছবি তুলে আইডিতে পোস্ট করেন। ক্রিকেটাররাও তাকে দারুণ ফ্যান হিসেবে চেনেন।

একদিন হাঠাৎই তার আইডিতে বেশকিছু নারী ক্রিকেটারদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। এর মধ্যে রুমানা আহমদে ও ফাহিমার ভুয়া আইডি অন্যতম। সেই সময় তারা খেলছিল দক্ষিণ আফ্রিকাতে। তাই ক্রিকেট সেই ভক্ত লিখেন আপনিতো এই সময় মাঠে খেলার কথা। এই সময় আপনি ফেসবুকে কিভাবে এসএমএস দিচ্ছেন? আর আমার সঙ্গে তোলা ক্রিকেটারদের ছবি ও তাদের নম্বর আপনাকে দিবো কেন? তখনও আসে নানা রকম অসংলগ্ন উত্তর। এমনকি গালাগালিও দেয়া সেই ক্রিকেট ভক্তকে। এরপর একদিন হঠাৎ করেই তার কাছে মোবাইলে টাকা নেই ফ্লেক্সি লোড করার কথা বলেন।

এমন অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে নারী ক্রিকেটারদের আইডি নিয়ে। যার সবই ভুয়া বলেই পরে প্রমাণিত হয়েছে। মূলত এ সব আইডি গুলোর চেষ্টা ক্রিকেটারদের নাম্বার যোগার করা। ও টাকা চেয়ে প্রতারণা করা। বিষয়গুলো বেশ ভালোভাবেই জেনেছেন নারী ওয়ানডে দলের অধিনায়ক রুমানা আহমেদ। প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপ জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করা এ নারী দলের সেরা ক্রিকেটারও বেশ বিব্রত এ বিষয়ে। তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়গুলো শুনেছি। বেশ বিব্রত করেছে আমাকে। শুনেছি আমার নামে আইডি খুলে ছেলে ও মেয়ে ক্রিকেটার নম্বর চেয়েছে। এমনকি কারো কারো কাছে টাকাও চেয়েছে। আসলে এই আইডি আমার না। আমি এরমধ্যে বিসিবি’র মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম ভাইকে বিষয়টি জানিয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের আইডিগুলো ভেরিফাইড করে ফেলতে। যেন অন্যকেউ এ ধরনের কাজ করতে না পারে। প্রয়োজন হলে আইনি ব্যাবস্থা নিবো। কারণ এর সঙ্গে আমাদের মানসম্মান জড়িত।