
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জয়লাভ করেছে বাংলাদেশ দল। ২০১৮ সালে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট ২০ টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে। এরমধ্যে জয় তুলে নিয়েছে ১৩ টি ম্যাচে। হারতে হয়েছে ৭ টি ম্যাচে। ভগ্নাংশের দিক দিয়ে তাকালে ইংল্যান্ড ভারত এর পরেই অবস্থান করছে বাংলাদেশ দল।
বাংলাদেশের পিছনে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সহ বাকি সব দল। ২০১৮ সালে জয়ের দিক দিয়ে বাংলাদেশ রয়েছে চতুর্থ স্থানে। ২০১৮ সালে জয়ের ভগ্নাংশের দিক থেকে সবার উপরে রয়েছে ভারত, এর পরেই রয়েছে ইংল্যান্ড এবং পরেই রয়েছে নিউজিল্যান্ড এবং বাংলাদেশ।
উল্লেখ্য, বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের এটাই ছিল দেশের মাটিতে শেষ ওয়ানডে টুর্নামেন্ট। এই টুর্নামেন্টকে বাংলাদেশ দল তাদের বিশ্বকাপের স্কোয়াড বাছাইয়ের এক্সপেরিমেন্ট হিসেবে নিয়েছিল। দলের মধ্যে বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছিল এই টুর্নামেন্টে।
বিশেষ করে ওপেনার তামিম ইকবালের সঙ্গী কে হবে তা নিয়ে মধুর সমস্যায় পড়েছিল। এই তিন ম্যাচে মূলত জেতার জন্য বাংলাদেশ দল যতটা না মরিয়া ছিল তার চেয়ে বেশি ছিল টিম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে সফরকারীরা টাইগারদের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারলেও আজ তৃতীয় ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোন গন্ধও ছিল না। বাংলাদেশ অনায়াসেই ম্যাচ জিতলো। তবে কি এটাই বাংলাদেশের বিশ্বকাপের দল?
যদিও ইংল্যান্ডের কন্ডিশন বাংলাদেশের চেয়ে পুরোপুরি আলাদা। টাইগাররা দেশের মাটিতে আলাদাভাবে স্পিন পিচে ভালো করলেও ইংলিশ কন্ডিশনে পেস আক্রমণে টাইগারদের ভালো করতে হবে। তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৩১ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করলো বাংলাদেশ।
ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টানা দ্বিতীয়বার ওয়ানডে সিরিজ জয়ের গৌরব অর্জন করলো টাইগাররা। গত জুলাইয়ে ক্যারিবীয়দের ঘরের মাঠেই ২-১ এ সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। ২০০৯ ও ২০১২ সালেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা। তামিম ইকবাল ৮১ ও মুশফিকুর রহিম ১৬ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ শেষ করেন।
এর আগে মেহেদী হাসান মিরাজ, সাকিব আল হাসান ও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার বোলিং তোপে সিলেটে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে স্বাগতিক বাংলাদেশকে ১৯৯ রানের টার্গেট দেয় সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ক্যারিবীয়দের পক্ষে টানা দ্বিতীয় শতক পূর্ণ করেন ক্যারিবীয় ওপেনার শাই হোপ। তার সেঞ্চুরিতে ভর করে টাইগারদের বিপক্ষে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ক্যারিবীয়দের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ১৯৮ । শাই হোপ ১০৮ রানে অপরাজিত থাকেন। মিরাজ ২৯ রানে ৪টি ও সাকিব এবং মাশরাফি ২টি করে উইকেট নেন।
সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে ১৯৯ রানের সহজ টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দারুণ সূচনা করা বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারায় দলীয় ৪৫ রানে। ৩৩ বলে ২৩ রান করে কিমো পলের বলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন লিটন দাস।
৪৫ রানে লিটনকে হারানোর পর সৌম্যকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন তামিম। দুই প্রান্ত থেকেই বাউন্ডারি আসে নিয়মিত। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় অর্ধশত রান পূর্ণ করেন তামিম ইকবাল। ঢাকায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৫০ রানের ইনিংস খেলার পর আজ সিলেটেও ক্যারিয়ারের ৪৪তম অর্ধশত পূর্ণ করেন ইনজুরি থেকে ফিরে আসা দেশসেরা এই ওপেনার। তামিমের পর অর্ধশত রানের মাইলফলক স্পর্শ করলেন সৌম্য সরকারও। ক্যারিয়ারের সপ্তম ওয়ানডে অর্ধশত সৌম্যের।
জয়ের থেকে মাত্র ২৩ রান দূরে থেকে প্যাভিলিয়নে ফেরেন সৌম্য সরকার। ৮১ বলে ৮০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে কিমো পলের বলে বোল্ড হন তিনি। ৫ চার ও ৫ ছক্কায় সাজানো ছিল সৌম্যের ইনিংস। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তামিমের সঙ্গে গড়েন ১৩১ রানের জুটি।
