
শেষ চারের টিকেট নিশ্চিত করতে হলে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে জয় ভিন্ন কোনো পথই ছিল না সাকিব আল হাসানের দলের সামনে।
শেষ পাঁচ ম্যাচে টানা হারে শেষ চারের সমীকারণটা বেশ জটিল হয়ে উঠেছিল ঢাকা ডায়নামাইটসের জন্য। শেষ পর্যন্ত বাঁচা-মরার এই লড়াইয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) গেল আসরের রানার্সআপরা। খুলনাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে শেষ চার নিশ্চিত করেছে ঢাকা।
ঢাকার এই জয়ের ফলে শিরোপার লড়াই থেকে ছিটকে গেল রাজশাহী কিংস। ঢাকার সমান ৬ ম্যাচে জয় পেলেও রান রেটের হিসাবে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিল মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
শনিবার মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে খুলনার কোনো ব্যাটসম্যানই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। তাতে নির্ধারিত ২০ ওভার ব্যাটিং করলেও স্কোরকার্ডে ১২৩ রানের বেশি জমা করতে পারেনি খুলনা। জবাবে উপুল থারাঙ্গা, সুনীল নারাইন ও নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটে চড়ে ৩১ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ঢাকা।
১২৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তেড়েফুড়ে শুরু করেছিলেন ঢাকার দুই ওপেনার উপুল থারাঙ্গা ও সুনীল নারাইন। থারাঙ্গা খানিকটা দেখেশুনে খেললেও ব্যাট হাতে খুলনার বোলারদের রীতিমতো শাসন করেন নারাইন। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে নারাইনের ঝড় থামান মোহাম্মদ সাদ্দাম। আউট হওয়ার আগেই ১৩ বলে ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৩৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন উইন্ডিজের এই বোলিং অলরাউন্ডার।
নারাইনের বিদায়ে যেন তেঁতে ওঠে থারাঙ্গা। কিন্তু বাঁচা-মরার লড়াইয়ে হাসেনি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ব্যাট। জ্বলে ওঠার আগেই তাকে সাজঘর দেখান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মিজানুর রহমান সাজঘরে ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই। তবে রানের চাকায় কোনোরকম প্রভাব পড়তে দেননি ম্যাচসেরা থারাঙ্গা।
চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৩০ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন শ্রীলঙ্কার বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। কাইরন পোলার্ডকে সঙ্গে নিয়ে বাকি কাজটুকু শেষ করেছেন নুরুল হাসান সোহান। পঞ্চম উইকেটে ৩৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তারা। ২৬ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন সোহান। ১৫ বলে ৯ রানে অপরাজিত থাকেন পোলার্ড।
খুলনার হয়ে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। একটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ সাদ্দাম ও তাইজুল ইসলাম।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই খেই হারায় খুলনা। স্কোরকার্ডে মাত্র ৮ রান যোগ হতেই ওপেনার জুনায়েদ সিদ্দিকীকে হারায় তারা। ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারেই খুলনার বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে ২ রানে সাজঘরে পাঠান রুবেল হোসেন। অপর ওপেনার ব্রেন্ডন টেলর চেষ্টা করেছিলেন বড় ইনিংস খেলার। কিন্তু ব্যক্তিগত ১৮ রানে তাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
এই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে খুলনার শিবিরে আবারও আঘাত হানেন রুবেল। ডানহাতি এই পেসারের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন ১০ বলে ৭ রান করা দাইউদ মালান। নাজমুল হোসেন শান্তকে দলকে টেনে তোলার জন্য চেষ্টা করেছিলেন খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু তাদের জুটিও বড় হতে দেননি কাজী অনিক।
১৭ বলে ১টি চারে ১৪ রান করা মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে ২৩ রানের জুটি ভাঙেন ঢাকার বাঁহাতি এই পেসার। ২০ বলে ১টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৪ রান করা শান্তকে থামান সাকিব। ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে উইকেটের একপ্রান্ত কিছু সময়ের জন্য আগলে রেখেছিলেন ডেভিড ওয়াইজ। কিন্তু তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই। ২৭ বলে ১টি চার ও ১টি ছক্কায় ইনিংস সর্বোচ্চ ৩০ রান করে রান আউটের ফাঁদে পড়েন ডানহাতি এই প্রোটিয়া অলরাউন্ডার।
ঢাকার হয়ে দুটি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান ও রুবেল হোসেন। একটি উইকেট নিয়েছেন সুনীল নারাইন ও কাজী অনিক।
ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ এর App ডাউনলোড করুন https://bit.ly/2THwv6u
