
যৌক্তিক ভাবেই প্রথম একাদশের খেলোয়াড়রা এক থেকে এগারো নম্বর জার্সি পরেন। অতিরিক্ত খেলোয়াড় নামলে সেই ক্রম অনুসারে বাড়ে জার্সির নম্বর। স্কোয়াডের ২৩ জনের প্রত্যেকের জন্য আলাদা করে নির্দিষ্ট জার্সি নম্বর চালু হয় ১৯৫৪ সালের বিশ্বকাপ থেকে।
ব্রাজিল বিশ্বকাপ শুরু হতে যাওয়ার আগে কিন্তু সেই শুরুর সময়ের মতো মাঠে খেলোয়াড়ের নির্দিষ্ট অবস্থানের জন্য নির্দিষ্ট নম্বরের জার্সি নেই। তারপরও মোটা দাগে একটা বিশ্লেষণ করাই যায়।
বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে আর্জেন্টিনার ফর্মেশন
বর্তমান বিশ্ব ফুটবলে ৪-২-৩-১ ফর্মেশনের জয় জয়কার। এখানে কোন জার্সি নম্বরটি কোন পজিশনের জন্য? এক নম্বরটি বরাবরই গোলরক্ষকের জন্য বরাদ্দ। ২ ও ৩ জার্সি রাইট ফুল ব্যাক ও লেফট ফুল ব্যাকের; ৪ ও ৫ সেন্টার ব্যাকের।
ফর্মেশনের দুই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের জার্সি নম্বর ৬ ও ৮। এর মধ্যে প্রথম জন খেলেন একটু পিছিয়ে, পরের জন একটু এগিয়ে। এর পরের তিন জনের মধ্যে ডান প্রান্তের উইঙ্গার/মিডফিল্ডার ৭ নম্বর, বাঁ প্রান্তের জন ১১ নম্বর এবং মাঝের প্লে-মেকার ১০ নম্বর জার্সির দাবিদার। আর ফর্মেশনের প্রান্তে থাকা স্ট্রাইকারের জার্সি নম্বর ৯।
৪-২-৩-১ ফর্মেশন:
১
২ ৪ ৫ ৩
৬ ৮
৭ ১০ ১১
৯
ব্রাজিলের ৪-২-৩-১ ফর্মেশন
মাঠে খেলোয়াড় সাজানোর এটি অবশ্য ইউরোপীয় রীতি। লাতিন আমেরিকায় ব্যাপারটিতে কিছুটা ভিন্নতা আছে। সেখানে ৩ ও ৪ নম্বর জার্সিধারীরা সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার। ২ ও ৬ নম্বর হচ্ছেন ফুল ব্যাক। ব্রাজিল দলে ৬ নম্বর জার্সিটি ঐতিহ্যগতভাবেই লেফট ফুল ব্যাকের। সেটি ১৯৭০ বিশ্বকাপের এভারালদো, কিংবা আরেক কিংবদন্তি রবার্তো কার্লোস সবার অধিকারেই ছিল। আর ৫ নম্বর জার্সিধারীরা ব্রাজিলে হয় সাধারণত ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার।
৪-২-৩-১ ফর্মেশন:
১
২ ৩ ৪ ৬
৫ ৮
৭ ১০ ১১
৯
৪-৪-২ এর ক্লাসিক ফর্মেশনে জার্সি নম্বর ওই ৪-২-৩-১ এর মতোই। কেবল ১০ নম্বর জার্সিধারী চলে যাবেন সামনে। আর পেছনে থাকা ৬ ও ৮ নম্বর জার্সির খেলোয়াড়রা এগিয়ে যোগ হবেন দুই উইংয়ের ৭ ও ১১ নম্বরের সঙ্গে।
৪-৪-২ ফর্মেশন:
১
২ ৪ ৫ ৩
৭ ৬ ৮ ১১
১০ ৯
‘ডায়মন্ড’ ফর্মেশনে আবার সেন্টার ফরোয়ার্ডে ৯ নম্বরের সঙ্গে গিয়ে যোগ হবেন ১১। ডায়মন্ডের রক্ষণপ্রান্তে ৬ ও আক্রমণ প্রান্তে ১০ নম্বর জার্সির ফুটবলার থাকেন। আর মাঝের দুজন ৭ ও ৮।
ডায়মন্ড ফর্মেশন:
১
২ ৪ ৫ ৩
৬
৭ ৮
১০
৯ ১১
ওদিকে ৪-৩-৩ ফর্মেশনের হিসেবটা আবার একটু অন্যরকম:
১
২ ৪ ৫ ৩
৬ ৮
১০
৭ ৯ ১১
তবে এই জার্সি নম্বর নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করেছে নেদারল্যান্ডসের সেই কিংবদন্তি দল। ‘টোটাল ফুটবল’-এর মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল তারা। ওই খেলার ধরনে সবাইকে সব পজিশনে খেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। যে কারণে সাধারণত গোলরক্ষকের জন্য বরাদ্দ থাকা এক নম্বর জার্সি দেওয়া হয় অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার রুদ খিল্সকে। আর প্লে-মেকারদের প্রিয় জার্সি ১০ নম্বর উপেক্ষা করে ইয়োহান ক্রুইফ নিয়েছিলেন ১৪ নম্বরের জার্সি।
এরপর থেকে নেদারল্যান্ডস জাতীয় দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জার্সি নম্বরটাই হয়ে গেল ১৪!
