
আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ফাইনালে মাঠে নামবে ক্রোয়েশিয়া। আজ ফাইনাল ট্রফি জিততে পারলে হবেন দেশটির প্রথম বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কও লুকা মদ্রিচ। তার পরও জেলে যেতে পারেন এই অধিনায়ক।
শুনতে খুব অবাক লাগছে! দেশকে প্রথম বারের মত বিশ্বকাপ জেতালেও কেন দেশের মানুষের মন পাবেন না এই ফুটবলার? কেনই বা জেল খাটার কথা আসছে?
কারণ, ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলপ্রেমীদের কাছেই জনপ্রিয় নন মদ্রিচ। মদ্রিচকে তারা ঘৃণার চোখে দেখেন, মদ্রিচ যে তাদের চোখে একজন মিথ্যাবাদী!
এক সময় মদ্রিচ ক্রোয়েশিয়ার অন্যতম শীর্ষ স্থানীয় ক্লাব ডায়নামো জাগরেবের হয়ে খেলতেন। এই ক্লাবের নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব মামিচ।
তিনি প্রভাবশালী লোক হওয়ায় প্রতিভাবান ও উঠতি খেলোয়াড়দের ওপর কিছুটা প্রভাব খাটাতেন। লুকা মদ্রিচ, দেজান লভরেন, সিমে ভারসালকোর মতো তারকার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলেন তিনি।
চুক্তিতে উল্লেখ করেন ক্লাবের হয়ে যতদিন থাকবেন ততদিন তাঁদের সব খরচের দায়িত্ব নিবেন মামিচ নিজে। তার সাথে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার একটি চুক্তিও ছিলো। কিন্তু খেলোয়াড়দের সঙ্গে একটি আলাদা চুক্তি হয়েছিল যেখানে বলা হয়েছিল যদি খেলোয়াড়রা কখনো এই ক্লাব ছেড়ে অন্য ক্লাবে পাড়ি জমান, সেই ক্ষেত্রে তাঁদেরকে ট্রান্সফার ফির একটি অংশ মামিচকে দিয়ে যেতে হবে।
সেই সাথে মামিচ আরও একটি বিষয় জুড়ে দেন সেই চুক্তিতে। চুক্তিতে বলা হয়েছিল তাঁদের খেলোয়াড়দের এজেন্ট হবে মামিচের পুত্র মারিও। অর্থাৎ কোন খেলোয়াড় যদি এক দল থেকে অন্য দলে ট্রান্সফার হয় সে ক্ষেত্রে ট্রান্সফার ফির একটি অংশ আয় করেন এজেন্টরা। সেই সময় চুক্তি মেনেই চুক্তিতে সই করেছিলেন মদ্রিচ।
২০১০ সালে তিনি ওই ক্লাব ছাড়েন মাদ্রিচ। এই ক্লাব ছেড়ে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান তিনি। ইংলিশ ক্লাব টোটেনহ্যামে যোগ দেন ১০.৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে। সেই হিসেবে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমানোর জন্য মদ্রিচের চুক্তি অনুযায়ী মাচিচকে দিতে হয়ে ৮.৫ মিলিয়ন ইউরো।
এই চুক্তির পুরো প্রক্রিয়াই ছিল অবৈধ। যার জন্য এক সময় এই ঘটনাগুলো সবার সামনে ফাস হয়ে যায়। লেনদেনে অবৈধ ভাবে করায় সময় পুলিশের কাছে ধরা পড়েন মাচিচ। শুনানি শেষে ৬ বছরের সাজাও দেওয়া হয় তাকে।
মামলা চলাকালীন সময় সাক্ষ্য দিয়েছিলেন খোদ মদ্রিচ। এই সাক্ষ্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে তিনি হয়ে যান দেশের কাছে ভিলেন।
তদন্তের এক পর্যায়ে দেখা যায় মদ্রিচের একটি বক্তব্য তাঁর পরবর্তী বক্তব্যর মধ্যে কিছুটা সাংঘর্ষিক হচ্ছে। যার কারণে মদ্রিচের বিরুদ্ধে আনা হয় মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার অভিযোগ। আর এই অভিযোগের শুনানি শুরু হবে বিশ্বকাপের পরপরই। ঘটনা যদি প্রমানিত হয় সে ক্ষেত্রে মদ্রিচকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পেতে হবে।
