
খেলাধুলায় অনেক ধরণের নয়ম কানুন রয়েছে।যেমন বাস্কেটবল খেলায় প্লেয়ার দের সর্বনিম্ন উচ্চতা ৬ ফিট থাকতে হয়। এছাড়া আরো কিছু খেলাতেও উচ্চতা নিয়েও নিয়মকানুন আছে। আবার অনেক খেলাধুলাতেই উচ্চতা কোনো ব্যাপার না। ক্রিকেটেও উচ্চতা নিয়ে আলাদা কোন নিয়ম নেই।
তারপরেও কিছু ক্রিকেটার নিজেদের উচ্চতা দিয়েই নিজেকে চিনিয়েছেন একটু আলাদাভাবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে লম্বা কয়েকজন ক্রিকেটার আছেন যারা নিজেদের উচ্চতার সাথে পারফর্মেন্স গ্রাফও উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন। অন্যদিকে কয়েকজনের নিজেদের উচ্চতা ভালো হলেও পারফরমেন্স গ্রাফের উচ্চতা ভালো করতে পারেননি। লম্বাদের মধ্যে বেশিরভাগই পেস বোলার।
১/ মোহাম্মদ ইরফান (২১৬ সেন্টিমিটার), পাকিস্তান –
ক্রিকেট খেলোয়াড়দের উচ্চতা সম্পর্কে ধারনা পাল্টে দিয়েছেন তিনি। ৭ ফিটের উপরে ক্রিকেট খেলোয়াড় আগে দেখেনি ক্রিকেট বিশ্ব। ইরফান ৭ ফিটের চেয়েও ১ ইঞ্চি লম্বা। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর পারফরমেন্সের চেয়ে উচ্চতা নিয়েই নজর কেড়েছেন বেশি। মাঝেমাঝে ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল ছুড়তে পারতেন এবং উচ্চতা কাজে লাগিয়ে বাউন্স দিতে পারতেন বেশ। ২০১৫ বিশ্বকাপে একজন ব্যাটসম্যান বলেছিল ইরফান যখন বোলিং করে তখন মনে হয় কেউ দোতলা থেকে বল ছুড়ছে। লম্বা হওয়ার কারণে তার সাথে উদযাপনে আলাদা মাত্র যোগ করতে হয় সতীর্থদের। উপরের দিকে হাত তুলে দিয়ে কিংবা লাফ দিয়ে ইরফানের হাতের সাথে হাত মিলিয়ে উইকেট উল্লাস করতে দেখাটা অন্যরকম।
২/ জোয়েল গার্নার (২০৩ সেন্টিমিটার), উইন্ডিজ –
বিংশ শতাব্দিতে তিনিই ছিলেন ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে লম্বা ক্রিকেটার। ‘বিগ বার্ড’ নামেও পরিচিত ছিলেন ৬ ফিট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার ক্যারিবিয়ান এই পেসার। ১৯৯৭ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত দশ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দাপিয়ে বেড়েছেন। ভয়ংকর ইয়র্কার দিতে পারতেন।
৩/ ব্রুস এন্থনি রিড (২০৩ সেন্টিমিটার), অস্ট্রেলিয়া –
অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বোচ্চ লম্বা ক্রিকেটার। ৬ ফিট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার পেসার ছিলেন তিনি।
৪/ উইলিয়াম বয়েড র্যাঙ্কিন (২০৩ সেন্টিমিটার), আয়ারল্যান্ড এবং ইংল্যান্ড –
৬ ফিট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার এই ক্রিকেটার উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং ইংল্যান্ড উভয়দলের হয়েই খেলেছিলেন। ডানহাতি এ পেসার ভয়ংকর সব বাউন্সার দিতে পারেন। ২০০৭ আইসিসি ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপে আয়ারল্যান্ড দলে ছিলেন। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি২০তে ইংল্যান্ডের হয়ে অভিষিক্ত হয়েছেন এবং ২০১৩-১৪ সালের এশেজ সিরিজে ইংল্যান্ড স্কোয়াডে ছিলেন তিনি।
৫/ পিটার রবার্ট জর্জ (২০৩ সেন্টিমিটার), অস্ট্রেলিয়া –
৬ ফিট ৮ ইঞ্চি উচ্চতা নিয়ে ব্রুস রিডের প্রায় সমান লম্বা ছিলেন এই পেসার। প্রায়ই ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল ছুড়তেন। ২০১০ সালে মাত্র একটি টেস্ট খেলে ২ উইকেট সংগ্রহ করেছেন তিনি।
৬/ কোর্টলি এলকন লিনওয়াল আমব্রোস (২০১ সেন্টিমিটার), উইন্ডিজ –
৬ ফিট ৭ ইঞ্চি উচ্চতা নিয়ে ১৯৮৮ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় এই ক্যারিবিয়ানের। ১৯৯৬ সালে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেরে যাওয়ার পর উইন্ডিজ দলকে গুডবাই জানান তিনি। পেসারদের মধ্যে একজন কিংবদন্তি তিনি। লম্বাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো পারফরমেন্স করেছেন তিনিই।
৭/ ক্রিস্টোএফার ট্রিমথি ট্রেমলেট (২০১ সেন্টিমিটার), ইংল্যান্ড –
৬ ফিট ৭ ইঞ্চি উচ্চতা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা ইংলিশ ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে লম্বা। ২০০৭ সালে ভারতের বিপক্ষে অডিয়াই ক্রিকেটে অভিষেক হলেও ২০০৫ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষেই হয়েয়ে গিয়েছিল টেস্ট অভিষেক। বাউন্স দিতে খুবই পারদর্শী এ পেসার ১২ টেস্টে ২.৯ ইকোনমি রেটে ৫৩ উইকেট নিয়েছেন। দুইবার করে পেয়েছেন ৪ উইকেট এবং ৫ উইকেট। কোনো ম্যাচেই ১০ উইকেট পায়নি।
৮/ সুলিমান জামাল বেন (২০১ সেন্টিমিটার), উইন্ডিজ –
স্পিনারদের মধ্যে ৬ ফিট ৭ ইঞ্চি নিয়ে তিনিই সবচেয়ে লম্বা। ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হওয়া এ বাঁহাতি স্পিনার স্পিন ভেল্কিবাজির চেয়ে উচ্চতা দিয়েই দর্শকদের কাছে পরিচিতি পেয়েছেন বেশি।
৯/ জেসন ওমর হোল্ডার (২০১ সেন্টিমিটার), উইন্ডিজ –
৬ ফিট ৭ ইঞ্চি লম্বা ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার। বর্তমানে উইন্ডিজের অধিনায়ক এই পেস অলরাউন্ডার। ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক হলেও ২০১৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি২০ এবং টেস্ট অভিষেক হয়। পেস বোলিংয়ের সাথে লোয়ার মিডল অর্ডারে নেমে দ্রুত রান তুলা এবং ফিনিশিং দেয়া ভালোই পারেন।
১০/ টম ম্যাসন মুডি (২০০ সেন্টিমিটার), অস্ট্রেলিয়া –
অন্যান্য লম্বাদের মতো তিনি বোলার না হয়ে হয়েছিলেন অলরাউন্ডার। ৬ ফিট পৌনে ৭ ইঞ্চি উচ্চতা নিয়ে অলরাউন্ডারদের মধ্যে তিনি সবচেয়ে লম্বা। ব্যাক ইঞ্জুরির জন্য ক্যারিয়ারে ইতি টানলেও যতদিন খেলেছেন বেশ ভালোই খেলেছিলেন।
