
ফিটনেস যে কোনও স্পোর্টসম্যানের জন্য বাধ্যতামূলক। একজন খেলোয়াড়ের যদি ফিটনেস না থাকে তাহলে খেলাটা ঠিকমতো আয়ত্ত করতে পারে না। যে স্পোর্টসম্যান যত ফিট সে তত বড় মাপের খেলোয়াড়। এই কারণেই একজন স্পোর্টসপারসনকে একজন সুস্থ সাধারণ ব্যাক্তির তুলনায় অনেক বেশি খাটতে হয় নিজকে ফিট রাখার জন্য। আগেকার দিনে এই ফিটনেস ব্যাপরটা তেমন একটা গুরুত্ব দিত না। আগেরকার দিনের অনেক খেলোয়াড় ছিলো যারা ফিটনেস বিহীন খেলে গেছে দলে। সেই ক্রিকেটাররা যদি বর্তমানে সময়ে খেলতেন, তাহলে কোনও দিনই জাতীয় দলে জায়গা করে নিতে পারতেন না।
আজ দেখে নিবো ফিটনেস বিহীন খেলে যাওয়া ৬ অলস প্লেয়ারের নাম।
(১) ইনজামাম-উল-হকঃ (পাকিস্তান) ইনজামাম-উল-হক বর্তমানে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের নির্বাচকের দায়িত্ব আছেন। তিনি পাকিস্তানের হয়ে ওয়ান-ডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহক। পাকিস্তানের এই প্রাক্তন অধিনায়ক রান আউটের জন্য ক্রিকেটে বেশ বিখ্যাত ছিলেন। তাঁর মোটা চেহারা আর সিঙ্গেল রান নিতে না চাওয়ার জন্য, ইনজামাম’কে আলু বলে ডাকতেন তার সতীর্থরা। এতে তিনি অনেক খেপে যেতেন। কিন্তু, তিনি তা সত্ত্বেও নিজের অলস স্বভাব বদলাননি।

রান করার জন্য সিঙ্গেলস বা দু’রান নয়, বড় বড় শট নিতে পছন্দ করতে ইনজামাম। অথচ ইনজির কারণে তাঁর সতীর্থদের ভুগতে হয়েছে বেশ। পাকিস্থানের এই ব্যাটিং লিজেন্ডের খারাপ রানিং বিটুইন দ্যা উইকেটের কারণে ৪০জন ব্যাটসম্যানকে রান আউট হতে হয়েছিল। এক্ষেত্রে তিনি দ্বিতীয় ক্রিকেটার যিনি তাঁর সতীর্থদের রান আউট করে ফেলেন খারাপ রানার হওয়ার কারণে।
(২) ক্রিস গেইলঃ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ক্যারিবিয়ান এই তারকা ভীষণ রকমের বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান। নিজের স্টাইলেই খেলেন। ক্রিকেট মাঠে তাঁকে দেখলে কখনই বোঝা যায় না চাপে আছেন। বরং তাঁকে দেখলে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা চাপে থাকেন। ক্রিসের গেইলের এক বা দু’রান নেওয়া একেবারেই পছন্দ নয়।

গেইলের যুক্তি হলো, উইকেটের মাঝে দৌড়ে সময় এবং এনার্জি নষ্ট করার চেয়ে চার-ছয় মেরে রান করা বেশি ভালো। আশ্চর্যের বিষয়, তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারে গেইল অর্ধেক ফিট হয়ে মাঠে নেমেছেন এবং সেই অর্ধেক ফিট গেইল আবার বিপক্ষ টিমের বোলাদের কাঁদিয়ে ছেড়েছেন পিটিয়ে ছাতু করে।
(৩) মুনাফ প্যাটেলঃ (ভারত) ভারতের সাবেক খেলোয়াড় মুনাফ প্যাটেল একজন ফাস্ট বোলার হলেও খুব কুঁড়ে ছিলেন তিনি। ফিল্ডার হিসেবে তাঁর ওপর দলের কোনও দিনই ভরসা ছিল না।

তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার স্বল্প স্থায়ী হলেও দিন যত গড়িয়েছে তাঁর বলে গতিও তত কমে গেছে। আর এইভাবে’ই একদিন দল থেকে ছিটকে গেছেন তিনি। অনেক ম্যাচে মুনাফ বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডিং করার সময় বল ধরার জন্য ঝুঁকতেনও না। বরং চার হতে দিতেন। আর তার ফলও ভারতকে ভুগতে হয়েছিল অনেক।
(৪) নাসির জামশেদঃ (পাকিস্তান) পাকিস্তানের এই ক্রিকেটার নিজের টিমেরই বিভীষিকা।তিনি যেমন খারাপ ফিল্ডার, ঠিক তেমনই উইকেটের মাঝে বড্ড অলস রানার। তাঁর কারণে পাক টিমের বহু ব্যাটসম্যানকে রান-আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয়েছে।

(৫) মোহাম্মদ ইরফানঃ (পাকিস্তান) পাকিস্তানের এই ক্রিকেটারটি কুঁড়ে হলেও দর্শকদের খুব পছন্দের। সাত ফুটের ওপর লম্বা হওয়ার কারণে ফিল্ডিং করার সময় ঝোঁকার সুযোগ কমই পায়। তাই তার ফিল্ডিং খারাপের জন্য তাকে কম দোষ’ই দেয়া হয়। বরং ওই লম্বা লম্বা পা দিয়ে তাঁকে বাউন্ডারি বাঁচাতে দেখে ক্রিকেট ফ্যানরা অনেক আনন্দ পান।

(৬) ডোয়েন লেভেরকঃ (বারমুডা) বারমুডার এই ক্রিকেটার আবার এত কুঁড়ে তা নিয়ে কিছু বলার নেই। ক্রিকেট মাঠে যতজন ক্রিকেট খেলতে এসেছেন, তার মধ্যে সবচেয়ে মোটা চেহারার চিলেন তিনি। স্থুলকায় চেহারার হওয়ায় লোকে তাঁকে স্লাগো নামে ডাকে।

২০০৭ বিশ্বকাপে বারমুডার হয়ে অংশ নেওয়া ডোয়েনের ওজন ২৮০ পাউন্ড। ফিটনেস নিয়ে মাথা ঘামানোর কোনও বালাই ছিল না তাঁর মধ্যে। বল পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেলেও তাঁ ঝাঁপিয়ে বা দৌড়ে গিয়ে আটকানোর কোনও চেষ্টা করার মতো ক্রিকেটার মোটেই নন ডোয়েন। তাই অলসের খাতায় সহজেই নাম লেখান তিনি।
