
মনে পড়ে ২০০১ সালর কথা! বাংলাদেশ ক্রিকেট তখন অতোটা জনপ্রিয় না। একটি অাইসিসি ট্রফি জয়লাভ করার পর এ দেশে জেগে উঠে ক্রিকেট। ফুটবলের পাশাপাশি ক্রিকেট নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ। অার এই স্বপ্ন পূরন হয় যখন টেস্ট খেলার অনুমতি পায় বাংলাদেশ। অার তখনই ক্রিকেটে জন্ম হয় বাংলাদেশে সর্বকালের সেরা কিংবদন্তী।
তিনি আর কেউ নয় তার নাম মাশরাফি বিন মুর্জতা। নড়াইল জেলা থেকে উঠে অাসা সেই যুবক এখন বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার এবং বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা পেস বোলার এবং অধিনায়ক। ২০০১ সালে ৮ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক হয় তার। এর পর থেকে এখনো খেলে যাচ্ছেন তিনি। তবে নিজের প্রথম ম্যাচেই অালো ছড়িয়েছিলেন তিনি।
বল হাতে ৪ উইকেট শিকার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন মাশরাফি। সেই থেকে শুরু। ক্রিকেটকে তিনি এতটাই ভালোবাসেন যে বারবার ইনজুরিতে পড়ে ৬ বার অস্ত্রপাচার করেও থেমে থাকেন নি তিনি। বাংলাদেশের এই বীর সৈনিক হার মানেনি কনো ইনজুরির কাছে। সকল কিছুকে পরাজিত করে বার বার ছুটে এসেছেন তিনি ক্রিকেটের টানে। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্রিকেটে ফেরেন ২০১২ সালে।
দলের তখন খারাপ অবস্থা। র্র্যাংকিংয়ে দশে থাকা বাংলাদেশকে রক্ষা করতে অাসলেন চান্দিকা হাথুরুসিংহে। এসেই পুর দলকে পাল্টে দিলেন তিনি। মুসফিকুর রহিমকে অধিনায়ক থেকে সরিয়ে মাশরাফিকে অধিনায়ক করলেন তিনি। এই একটা সিদ্ধান্তই পাল্টে দিয়েছে বাংলাদেশকে। সে বছর ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়েকে পাত্তাই দেয়নি মাশরাফির বাংলাদেশ।
এরপর ২০১৫ অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডকে পরাজিত করে প্রথম বারের মত কোয়াটার ফাইনালে পা রাখে বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়। দেশের মাটিতে পাকিস্তানকে বাংলাওয়াশ করে ক্রিকেট বিশ্বকে আলোকিত করে বাংলাদেশ।
এরপর শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়। দক্ষিন অাফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়। সব মিলেয়ে দেশের মাটাতে পরাশক্তি হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। যার পিছনে মাশরাফির সাথে কোচ হাথুরুসিংহে অবদান কম নয়। ক্রিকেট বিশ্বে সমিহ অাদায় করে নেয় বাংলাদেশ।
এরপর ছাড় পায়নি ইংল্যান্ড। ওয়ানডে সিরিজে নিজেদের ভুলের কারনে ২-১ এ সিরিজ হারলেও প্রথম বারের মত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়লাভ করে বাংলাদেশ। বিদেশের মাটিতে ও অনেকটাই সফল বাংলাদেশ। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের দেখা না পেলেও লড়াই করেছিলো বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কা সিরিজে টেস্ট জয় করে টেস্ট, টি-টুয়েন্টি এবং ওয়ানডে তিন বিভাগেই সিরিজ সমতা করে বাংলাদেশ। সেই ২০০১ থেকে ২০১৭। ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে মাশরাফি পৌঁছে গেছেন ক্রিকেটের সর্বচ্চো চেড়ায়। টেস্ট ক্রিকেট ছেড়েছেন সেই ২০০৯ সালে। কিন্তু হঠাৎ করেই অভিমান করে বসলেন বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা এই ক্রিকেটার।
হঠাৎ করেই শ্রীলংকা সফরে টি-টুয়েন্টি থেকে অবসর নিলেন মাশরাফি। যা মেনে নিতে পারেনি দেশের কোটি কোটি ক্রিকেট প্রেমিরা। প্রধান মন্ত্রী অনুরোধেও অার ফিরলেন না তিনি। অনুরোধ করেছিলেন বিসিবি সভাপতি এবং বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব অাল হাসান। কিন্তু অভিমানি মাশরাফি যে তার সিদ্ধান্ত থেকে এক চুলও সরেনি।
কিন্তু নতুন করে অালোচনায় অাসেন বিপিএলে। এখন পয়ন্ত বিপিএলে বল হাতে শিকার করেছে ১২ উইকেট। এবং ব্যাট হাতে করেছেন ১৩১ রান। বিপিএলে ম্যান অফ দ্যা টুনামেন্ট হওয়ার অন্যতম দাবিদার মাশরাফি। এমন ভাবে আলো ছাড়িয়ে সকলের মনে আশা জাগিয়েছিলো তিনি। তাই তাকে আবারও টি২০ ক্রিকেটে ফিরার জন্য অনুরোধ করেছিলো।
কিন্তু জাতীয় দলে অার ফিরবেন না এটা তিনি পরিস্কার করেই বলেছেন। যখন দেশের এই বিপদের দিনে তাকে প্রয়জন তখনও তিনি অভিমান করে বসে অাছেন। তবে কি মাশরফির কাছে দেশ বড় নয়! নিজের জেদটা কেই বড় করে দেখছেন?
