২০০৯ সালে শেষ বারের মত টেস্ট খেলেছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। এর পরের ঘটনা বলার কিছু নেই! সেই ঘটনা সবাই জানি আমরা। তবে টেস্ট ক্রিকেটকে এখনও বিদায় বলেনি এই বীর যোদ্ধা, বরং সবসময় বলতে শুনেছি ক্যারিয়ারে আর একটিবারের জন্যে হলেও ফিরতে চান সাদা পোশাকের রাজকীয় ফরম্যাটে।

তবে ক্রিকেটঅঙ্গনে জোর গুঞ্জন শ্রীলংকার বিপক্ষে দুইটি টেস্ট সিরিজ খেলেই আনুষ্ঠানিকভাবে সাদা পোশাকে বিদায় যানাতে চান মাশরাফি।ইঙ্গিতটা কিছুদিন আগে ক্রিকবাজকে নিজেই দিয়েছিলেন মাশরাফি। বলেছিলেন “যদি ফিট থাকি এবং খেলার মতো অবস্থায় থাকি তাহলে কেন নয়? অবশ্যই ফিরতে পারি টেস্ট ক্রিকেটে”।গুঞ্জনটা এক বছর ধরেই শোনা যাচ্ছিলো। বছর নিউজিল্যান্ড সিরিজের আগেও বলেছিলেন “অল্প রান আপ নিয়ে সারাদিন বল করলেও কোন সমস্যা হবেনা”।

সেই সময় বিপিএলে অর্ধেক রান আপ নিয়েই খেলেছিলেন তিনি। তবে এবারের বিপিএলে দেখেছি মাশরাফি সম্পূর্ণ রান আপে কোন সমস্যা ছাড়াই বল করেছেন।সব অস্ত্রের ব্যবহার করেছেন, বাউন্সার, স্লোয়ার, ইয়র্কার সব। ক্রিকবাজকে বলেছেন লম্বা ফরম্যাটের ম্যাচ খেলতেও কোন সমস্যা হচ্ছেনা।   সাউথ আফ্রিকায় যাবার আগে উল্লেখ করেছেন জাতীয় লীগের দুটি চারদিনের ম্যাচের কথাও।তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কিছুদিন আগে কয়েকজন বোর্ড পরিচালক এবং তিন অধিনায়কের (মুশফিক তখন টেস্ট অধিনায়ক) সভায় বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন মাশরাফিকে সরাসরি জিজ্ঞেস করেন তিনি কি এখনো টেস্ট ক্রিকেটে ফেরার পরিকল্পনা করেন কিনা?

সেখানে মাশরাফি বলেন, তিনি বিষয়টা “কনসিডার” করছেন।এরপরই দুইদিন ধরে বিভিন্ন সূত্রে খবর আসছে মাশরাফি হয়তো শ্রীলংকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে আনুষ্ঠানিক অবসর নিবেন।

পুরো সিরিজে না খেললেও অন্তত ঢাকায় দ্বিতীয় টেস্টে মাঠ থেকেই অবসর নিবেন মাশরাফি।তবে হিসাব বলছে এটাই উত্তম সুযোগ নিজের ইচ্ছাটাকে পূর্ণ করার। শ্রীলংকার সাথে টেস্ট সিরিজের পর বাংলাদেশের জুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত আর ওয়ানডে ক্রিকেট নেই।

আবার জুলাই মাস থেকে পরের বছরের মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের টানা আন্তর্জাতিক সূচী আছে (মাঝখানে দেড় মাস বিপিএল ছাড়া)।  তারপর আছে বিশ্বকাপ। সুতরাং টেস্ট ক্রিকেটকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানানোর এটাই সবচেয়ে ভালো সুযোগ। কোন কারনে যদি আবার দূর্ঘটনা ঘটেও যায় তবুও প্রায় চারমাস সময় পাবেন ফিট হবার জন্য। তবে আশার কথা বর্তমানে মাশরাফি ক্যারিয়ারের সবচেয়ে লম্বা সময় ইনজুরি ছাড়া কাটাচ্ছেন এবং সাম্প্রতিক সময়ের ভেতর সবচেয়ে বেশি ফিট অবস্থায় আছেন।

এখন পালা অপেক্ষার, ঘরের মাঠে গ্যালারী ভরা দর্শকের সামনে নিজের সবচেয়ে প্রিয় ফরম্যাটকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানানোর সুযোগ মাশরাফি বিন মর্তুজা পান কিনা।মাশরাফির টেস্ট ক্যারিয়ার। ম্যাচঃ ৩৬ রানঃ ৭৯৭ ফিফটিঃ ৩ সর্বোচ্চঃ ৭৯ উইকেটঃ ৭৮।