আর্জেন্টিনায় মেসির নাম সংক্রান্ত একটা আইন করা হইয়েছে যে শিশুদের নাম মেসি রাখা যাবে না ! আর্জেন্টিনায় মেসি নামটি এতো বেশি মানুষের নাম হয়ে গেছে যে,বিশেষজ্ঞদের কপালে ভাঁজ পরে গেছে ।আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মেসি নামের মানুষ এতো বেশি বেড়ে যাবে যে প্রত্যেককে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করাটাই বিরাট কষ্ট সাধ্য হয়ে যাবে !

আপনার আশে পাশে একটু খুঁজ নিলেই যানতে পাড়বেন মেসিকে নিয়ে তার ভক্তদের উন্মাদনা ।আমরা সমাই একজন সফল মেসিকে চিনি কিন্ত লিওনেল মেসি কিভাবে আজকের মেসি হয়েছেন সেই গল্পটা কিন্তু অনেকেই যানিনা ।

চলুন যেনেনেই মেসির সাফল্যের গল্পটাঃ

মেসির জন্ম ১৯৮৭ সালের ২৪ জুন আর্জেন্টিনার রোসারিওতে ,তার বাবা জর্জ মেসি ছিলেন একজন শ্রমিক এবং মা সেলিনা মারিয়া ছিলেন পরিচ্ছন্নতা কর্মী ।আর ছিলেন মেসির দুই ভাই ও এক বোন ।

পাঁচ বছর বয়স থেকেই মেসির ফুটবল যাত্রা শুরু হয় । স্থানীয় ক্লাবের হয়ে খেলা শুরুকরেন মেসি ।১৯৯৫ সালে মেসির নিজের শহর রোসারিওর অল্ড বয়েসের হয়ে কইয়ার শুরু করে ।সেই ছোট বেলায় মাত্র ৯ বছর বয়স তার মেসির কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে এতোটাই পারদর্শী হয়ে উঠেন যে তার পায়ে একবার বল গেলে কমপক্ষে ১৫ মিনিটের আগে তার কাছ থেকে বল নেওয়ার সাধ্য ছিলোনা কারও ! দর্শকরা মাঠের বাইরে থেকে নৈপুণ্য দেখে ক্রমাগত শিস বাজিয়ে খেলা উপভোগ করে।

মেসির জীবনে সবকিছু ভালভাবে এগোচ্ছিলো। কিন্তু ১১ বছর বয়সে এসে মেসি হোঁচট খেয়ে পড়ল একটি কঠিন রোগের কাছে ।ওকটি গ্রোথ হরমোনের অভাব রয়েছে তার ।যে কারনে সমবয়সীদের চেয়ে তার বৃদ্ধি কম ।দ্রুত সময়ের মধ্যে এই রোগের চিকিৎসা না করা হলে তার গ্রোথ অস্বাভাবিকভাবে কমে যাবে । অথচ চিকিৎসা  অত্যন্ত ব্যায়বহুল ! রোগের চিকিৎসা হিসাবে প্রতিদিন এক যন্ত্রনাদায়ক ইনজেকশন পুশ করা হত তার পায়ে ,প্রথম ৭ দিন এক পায়ে পরের ৭ দিন অন্য পায়ে । মেসির এই ব্যায়বহুল চিকিৎসা কয়েকবছর পর্যন্ত ঠিকঠাক চলে । কিন্তু এর ফলে একপর্যায়ে তাদের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ হতে থাকে ।

প্রতি মাসে মেসির জন্য ১৫০০ ডলার খরচ করতে হত ,যা তার দিনমজুর বাবার জন্য দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিলো ।তিনি ঠিকমত মেসির চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারছিলেন না ।মজার ব্যাপার

হলো এই কঠিন রোগের মধ্যেও মেসি তার প্রিয় ফুটবলকে ছারেনি ,যন্ত্রনা নিয়েও মেসি ফুটবল প্র্যাকটিস করতে থাকে । তার চিকিৎসা প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো ঠিক সেই সময় মেসির জীবন অন্য দিকে মোড় নেয় ! মেসির খেলা দেখে তার কোন এক শোভাকাংক্ষী বার্সালোনার ক্রীড়া পরিচালক কার্লেস ম্রিকচার্সকে মেসির প্রতিভার কথা যানায় । মেসির অদ্ভুদ খেলার সুন্দর গড়নে কৌতোহই হয়ে তিনি নিজেই চলে আসেন মেসির খেলা দেখতে এবং একটি ছোট বাচ্চা ছেলে মেসির খেলা দেখে তিনি অবাক হয়ে গেলেন । এরপর তিনি মেসির চিকিৎসার খরচ বহন করবে বার্সেলোনা ।বিনিময়ে মেসিকে স্পেনে এসে বার্সেলোনায় খেলতে হবে । মেসির পরিবার সানন্দে রাজী হলেন এই প্রস্তাবে । মেসির বয়স ১৪ পরিবার নিয়ে স্পেনে বসবাস শুরু ।

বার্সেলোনার যুব একাডেমি লা বার্সিয়ার হয়ে তার খেলা শুরু । তার ফুটবল যাদু দিয়ে অল্পদিনেই জয় করে ফেললেন সবাইকে ,১৬ নভেম্বর ২০০৩ সাল মেসির বয়স তখন ১৬ বছর ১৪৫ দিন , সেই দিন তিনি প্রথম বার্সেলোনার হয়ে মাঠে নামেন । এর পর ২০০৫ সালে ১৭ আগস্ট হাঙ্গেরির বিপক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন মেসি এর পর আর তকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।