টেষ্টের অধিনায়কের দ্বায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হলো মুশফিকুর রহিমকে। তার জায়গায় অধিনায়ক করা হল সাকিব আল হাসানকে। বদল করা হয়েছে সহঅধিনায়কের পদেও। তামিম ইকবালের জায়গায় এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে। এ দিকে, এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, মুশফিককে কেনো সরিয়ে দেয়া হলো।

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে অধিনায়ক হিসেবে চরম ব্যর্থ হয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। সেই সাথে সাকিব ও মাশরাফিও ব্যার্থ হয়েছিলো। তাহলে তাদের কে কেন সরিয়ে দেওয়া হলনা। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর তো কোন উপমহাদেশের দলের জন্যই তেমন সুখকর নয়। এ ছাড়া টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে মুশফিক যেই সফল তা আর কেউ হতে পারে নি। তাহলে কি একটামাত্র সিরিজের জন্য এভাবে বাদ পড়ে গেলেন মুশফিক?

এমন প্রশ্নের উত্তরে নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিক যাতে চাপহীন ভাবে খেলতে পারে, এ জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আশা করি সে এখন চাপমুক্ত হয়ে পারফর্ম করতে পারবে।

এ ছাড়া আর কোনো কারণ কি ছিলো; তখন পাপন বলেন, ‘এমন অনেক বিষয় আছে, যা সব সময় বলা যায় না। আমাদের আসলে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে। সে পরিকল্পনা অনুসারেই আমরা সামনে যাবো। সামনে হয়তো আরো পরিবর্তন আসবে।

এই কথাটা বলে আসলে রহস্যই সৃষ্টি করেছেন বোর্ড প্রধান পাপন। যাতে মনে হয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যর্থতাই মুশফিকের অধিনায়কত্ব হারানোর একমাত্র কারণ নয়। কারণ আছে আরো। সেই কারণটা কী— সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি নাজমুল হাসান পাপন।

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বাজে পারফর্মের পাশাপাশি মুশফিক সমালোচিত হয়েছেন বেফাঁস মন্তব্য করেও। নিজের ফিল্ডিং পজিশন নিয়ে কোচ তাকে হস্তক্ষেপ করছেন বলে দাবি করেছিলেন মুশফিক। সেটাও প্রকাশ্য সংবাদ সম্মেলনে। এ নিয়ে বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন সংবাদ মাধ্যমের কাছে মুশফিকের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন।

এটা ধারণা করা নিশ্চয় অযৌক্তিক নয় যে, সংবাদ মাধ্যমের সামনে ওই রকম মন্তব্য করার বিষয়টিও মুশফিকের বিপক্ষে গেছে। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজেরও সময়ও সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক এমন কথা বলেছিলেন, অধিনায়ক হিসেবে যা তার জন্য তেমন শোভনীয় নয়। ওই ব্যাপারটি নিয়েও বোর্ডের কাছে বিরাগভাজন হয়ে উঠেছিলেন মুশফিক।

মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে বাংলাদেশ মোট ৩৪টি টেস্ট খেলেছে। এর মধ্যে ১৮টি ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। নয়টি ম্যাচ ড্র হয়েছে এবং বাকি সাত ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে। মুশফিকুর রহিমই বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি টেস্ট জেতানো অধিনায়ক। কিন্তু এই যাত্রাটা আর দীর্ঘ হলো না। এ বিষয়ে আপাতত মুশফিকুর রহিমের মতামত পাওয়াও মুশকিল। বিপিএলে নিজের দলের খেলা শেষে মুশফিক আপাতত ছুটি কাটাতে থাইল্যান্ডের অবস্থান করছেন।