জার্মানীর হয়ে আর মাঠে দেখা যাবে না মেসুত ওজিলকে। রবিবার একরাশ ক্ষোভ নিয়ে এই ঘোষণা করলেন মেসুত ওজ়িল। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “জার্মান ফুটবল সংস্থা আমার সঙ্গে যেই ধরণের ব্যবহার করেছে, এই ব্যাবহারের পর দেশের জার্সি গায়ে মাঠে নামা আমার পক্ষে সম্ভব না”। এ ছাড়াও তিন আরও বলেন, “রাশিয়া বিশ্বকাপে জার্মানির অপ্রত্যাশিত হারের জন্য আমাকেই দায়ী করা হয়েছে”। তিনি এটাও বলেন, ‘‘দল জিতলে আমি জার্মান আর দল হারলে আমি অনুপ্রবেশকারী। বারবার আমাকে এই কথা শুনতে হয়েছে।’’

তুরস্কের সঙ্গে জার্মানির রাজনীতিক সম্পর্ক ভাল নয়। সে জন্যই সমস্যায় পড়তে হয়েছিল ওজ়িল ও ইলখাই গুন্ডোয়ানকে। রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরুর আগে লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোগান। সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পান ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলছেন এমন দুই তুরস্কজাত জার্মান ফুটবলার মেসুত ওজ়িল ও ইলখাই গুন্ডোয়ান। অনুষ্ঠানে মাঝে এই দু’জনে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ছবিও তোলেন। তার সাথে ছবি তুলায় বিপরীত প্রতিক্রিয়া হয় পুরো জার্মানিতে।

আর এই করণে অনেক কটূক্তিও শুনতে হয় তাঁদের। গুন্ডোয়ান বিষয়টি নিয়ে ক্ষমা চাইলেও ওজ়িল এত দিন মুখ খোলেননি। রবিবারই প্রথম আর্সেনালের এই মিডফিল্ডার দীর্ঘ বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেন আর জার্মানির হয়ে খেলবেন না।  এর আগে ওজ়িল টুইটারে লেখেন, ‘‘তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমার ছবি তোলার সঙ্গে রাজনীতি বা নির্বাচন প্রক্রিয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।’’

এই কাজ কেন করেছিলেন তারও বললেন ওজ়িল। এনিয়ে ওজিল বলে, ‘‘আমার দু’টি হৃদয়। একটি জার্মান। অন্যটি তুরস্কের। মনে রাখবেন ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার অর্থ ছিল আমার পরিবারের আদি বাসভূমিকে সম্মান জানানো।’’

তুরস্কের সঙ্গে নিজের দুর্বলতার কথাও বললেন, ‘‘ছোটবেলায় আমার মা আমাকে শিখিয়েছিলেন কখনও ভুলে যেও না তোমার উৎস কোথায়। আমার কাছে সেই শিক্ষার মূল্য আজও একই রকম গুরুত্বপূর্ণ।’’

এ দিন বিবৃতিতে জানান, ‘‘দলের পোলান্ডজাত খেলোয়াড়দের তো কখনও জার্মান-পোলিশ বলা হয় না। আমাদের কেন জার্মান-তূর্কি বলা হয়! কারণ, আমরা অন্য ধর্মের বলে?’’

ওজ়িল আরও জানিয়েছেন, তুরস্ক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করার সেই দিনটায় তাঁদের মধ্যে শুধুই ফুটবল নিয়ে কথা হয়েছিল। কিন্তু জার্মানরা এখনও তাঁর প্রতি সদয় নয়। এই মানসিকতা তৈরি হওয়ার কারণ তুরস্কে তাঁদের সেই ছবি নিয়ে নির্বাচনী প্রচারের কাজে লাগানো হয়েছিল। তাই তাঁদের বেশি সমালোচনা হয়।