ফুটবলে প্রথম ভালোবাসার নাম ব্রাজিল! ফুটবল সৌন্দর্যের বাহক হচ্ছে পেলের দল ব্রাজিল। হলুদ জার্সি মানেই আবেগ, হলুদ মানে ফুটবল মাঠে বিশেষ কিছু একটা।

৩৮ এ অদম্য দলটার বিস্ময়কর নিশ্চিত বিশ্বকাপ মিস, ৫০ এ ফুটবল ইতিহাসের বৃহত্তম মারাকানা ট্র্যাজেডী…তারপর ৫৮ থেকে ৭০ পর্যন্ত হলুদ বিপ্লব,চার বিশ্বকাপে তিন শিরোপা। কে ছিল না? পেলে, গ্যারিঞ্চা, জুজিনহো, জাগালো, আমারডিও… এরপর সাম্বা যুগ।

বল পায়ে তালে তালে এগিয়ে যাওয়া। গ্যালারীর দর্শকদের সাথে সাথে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রাও দর্শক। ডাঃ সক্রেটিস, জিকো, এলডার, সিজার, ফ্যালকাও…সবুজ মাঠে হলুদ নাচ। প্রথমবারের মতো ফুটবল মাঠ হলো মঞ্চ, নাচের মঞ্চ।

এখনো ফুটবল প্রেমীরা সেই এক দশককে ভুলতে পারে নি। ম্যারাডোনার উত্থানের আগে পর্যন্ত ফুটবলে আলোচ্য বিষয় ছিল এই সাম্বাই.. খানিক বিরতি দিয়ে আবারো সোনালী বিপ্লব। পরপর তিন বিশ্বকাপ ফাইনাল, দুইটাতে  চ্যাম্পিয়ন। ফুটবল যে এগারোজনের খেলা সেটা প্রমাণ হতো হলুদরা মাঠে নামলে। কে তারকা ছিল না?

ডিফেন্সে কাফু, কার্লোস..মাঝমাঠের রিভালদো, কাকা, রোনালদিনহো কিংবা আক্রমণের রোনালদো, রোমারিও। বলা হতো সে সময়কার ব্রাজিলের সাইড বেঞ্চও যে কোন শীর্ষ দলকে অনায়াসে হারিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখত।

ভাবা যায় বর্তমানে সারা বিশ্ব মিলিয়ে যেখানে দুইজনের বেশি তিনজন ব্যালন ডিঅর পাওয়া যায় না সেখানে এক দশক আগে এক ব্রাজিল টিমেই একসাথে খেলেছে চার-চারজন ব্যালড ডিঅর!! এটাই ব্রাজিল ফুটবল। এ বছর অলিম্পিক জিতেছে। সর্বশেষ আন্তর্জাতিক শিরোপা পাওয়ার মাত্র তিন বছর হয়েছে।

তারপরও মনে হচ্ছে কত শতাব্দি ধরে ব্রাজিল শিরোপা শূন্য! ব্রাজিল ফুটবলের মানদণ্ড ঠিক এখানেই। অন্য যে কারো সাথে ব্রাজিলের পার্থক্য প্রত্যাশার এ জায়গা থেকেই। উচ্ছ্বসিত এই কারণেই যে ব্রাজিল মাঝখানের অন্ধকার সময় পার করার বার্তা দিচ্ছে।

তিনটা গোল দেয়ার পরও মুহুর্মুহু আক্রমণ, প্রতিপক্ষকে বিন্দুমাত্র দয়া না দেখানো, লিড ধরে রাখার থোড়াই কেয়ার করা…. ব্রাজিল ফুটবল মানেই তো এই গতি, এটাই তো ব্রাজিলের আসল রূপ…এটা দেখেই তো প্রেমে পড়েছিলাম সাম্বা ফুটবলের। কাম অন ব্রাজিল.. সোনালী যুগ আবার আসুক।

নেইমার নির্ভরতা ধীরে ধীরে কেটে যাক। ব্রাজিল কেবল এক মিস্টার টেন এর দল না, ব্রাজিল মিস্টার টু, মিস্টার সিক্স, মিস্টার সেভেন-এইট-নাইন- টেন-ইলেভেন সবার দল। একেকটা জার্সি নাম্বার বললেই একেক জন ফুটবলারের চেহারা ভেসে উঠে। এরকম উদাহরণ আর একটা টিমেরও নেই, হবেও না কখনো।