অনেক আগে সাকিব আল হাসানের একটা সাক্ষাৎকার দেখেছিলাম…
উপস্থাপিকা সাকিব আল হাসানকে প্রশ্ন করেছিলেন, “আপনার অনুপ্রেরণার উৎস কি?”
মুচকি হাসি দিয়ে সাকিব আল হাসান বলেছিলেন- একবার মিরপুরের এক রোডে প্রচন্ড জ্যামে আটকা পড়ে ছিলাম,

এমন সময় আমার গাড়ির কাছে দশ বার বছরের একটি ছোট মেয়ে এসে বললো- ‘স্যার আমার কাছে গোলাপ ফুল আছে, আপনি কিনবেন?’ মেয়েটা তখনও হয়তো আমাকে চিনতে পারেনি, আমি চোখ থেকে সানগ্লাসটা খুলে বললাম- ‘হ্যা কিনবো, দাও!’ মেয়েটা ততক্ষণে আমাকে চিনে ফেলেছে, তারপর মেয়েটা আমাকে তার কাছে থাকা সব ফুল দিয়ে দিলো। আমি তাকে টাকা দিলাম, কিন্তু সে টাকা নিলো না।

মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে বললো- “স্যার আমাকে টাকা দিতে হইবো না, আপনি প্রত্যেক ম্যাচে অন্তত একটা করে ছক্কা মাইরেন তাইলেই আমার ফুলের দাম শোধ হইবো!”সাকিব আল হাসান কথাগুলো হাসি মুখেই বলেছিল, তবুও তার চোখে মুখে বিষাদের ঢেউ বয়ে যেতে দেখেছিলাম…এতো বছর আগের কথা অথচ সাকিব আল হাসান এখনও ব্যাট হাতে মাঠে নামলে নাকি সেই মেয়েটার কথা মনে পড়ে যায়।

মনে পড়ে যায় মেয়েটাকে দেওয়া ছক্কা মারার প্রতিশ্রুতির কথা। মেয়েটার ফুলের দাম হয়তো ঠিকই শোধ করা যেত! কিন্তু ফুলের সাথে মেয়েটা ভালবাসার যে উদাহরণ রেখে গেছে সেটা কখনও শোধ হবার নয়!

সৌরভ গাঙ্গুলি একবার বলেছিলেন- “জ্যাক কালিস, হাফিজ, ওয়াটসনদের মতো খেলোয়াড় প্রতি দশ বছরে একটা করে জন্ম নেয়। আর সাকিব আল হাসানের মতো খেলোয়াড় একশ বছরেও একটা জন্ম নেয় না!”সাকিব নামক বেয়াদব ছেলেটাকে আমরা কখনও ভালবাসিনি, আমরা কখনও চিনি নি এই ছেলেটাকে।

অথচ বিশ্ব ঠিকই চিনেছে, বিশ্ব তাকে ঠিকই সন্মান দিয়েছে…একদিন ব্যাট হাতে মাঠ কাঁপাতে দেখা যাবে না আর ছেলেটাকে, বল হাতে বাংলাদেশ দলটাকে জেতানো ছেলেটাকে খুব মিস করবে সবাই।সেই স্বার্থপর বেয়াদপটা দলের কথা ভাবতে গিয়ে নিজের সেঞ্চুরি থেকে মাত্র তিন রান দূরে থাকা অবস্থাতেও বড় শর্ট খেলতে গিয়ে আউট হয়ে যেতো…

অাজ সাকিব অাল হাসান এর অান্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ১৩তম বছরে পর্দাপন করলো,
জানিনা এই সাকিব অাল হাসান কে অামরা অার কতোদিন অামাদের দেশের হয়ে লড়াই করতে দেখবো,
তবুও দোয়া করি সাকিব অাল হাসান যেনো সুস্থ ভাবে অামাদের ক্রিকেট কে দিয়ে যেতে পারেন অারো বহু বছর সার্ভিস।
ভালোবাসা ও কৃজ্ঞতা রইলো মিঃ অলরাউন্ডার 75